শিশুর মন এমন একটি কোমল ও সংবেদনশীল স্তর, যা সহজেই প্রভাবিত হতে পারে। প্রাচীনকাল থেকেই বাচ্চাদের শাসন করার জন্য অনেক অভিভাবক ভয় প্রদর্শন করে থাকেন, কিন্তু এর ফলাফল হতে পারে বিপরীত এবং ক্ষতিকারক। এখানে কিছু কারণ আলোচনা করা হলো কেন শিশুকে ভয় দেখানো উচিৎ নয়।
আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া: ভয় প্রদর্শন করার ফলে শিশুর মধ্যে একটি অস্বস্তিকর মানসিক অবস্থা তৈরি হয় যা তার আত্মবিশ্বাসকে কমিয়ে দেয়। ভয় দেখিয়ে শাসন করলে শিশু নিজেকে দুর্বল ও অবমূল্যায়িত অনুভব করে। ফলে তার স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
আবেগিক ও মানসিক সমস্যা: শিশুকে ভয় দেখানো তার মধ্যে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এসব সমস্যা পরবর্তীতে আরো গভীর ও জটিল আকার ধারণ করতে পারে, যা তার জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্বাসের অভাব: ভয় প্রদর্শন করলে শিশুর মধ্যে অভিভাবকের প্রতি বিশ্বাস কমে যেতে পারে। শিশুরা অভিভাবকদের কাছ থেকে নিরাপত্তা ও ভালবাসা আশা করে। কিন্তু ভয় দেখালে তাদের মনে এক ধরনের ভীতি ও দুরত্ব তৈরি হয় যা তাদের সম্পর্ককে দুর্বল করে দেয়।
শিক্ষায় প্রভাব: ভয়ের মাধ্যমে শাসন করলে শিশু সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হতে পারে। তারা হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে অভিভাবকের কথা মেনে নেয়, কিন্তু এর ফলে তাদের মধ্যে সঠিক ও ভুলের পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা গড়ে ওঠে না। তারা ভয় থেকে শেখে, কিন্তু তা গভীর ও স্থায়ী শিক্ষা হিসেবে কাজ করে না।
সৃজনশীলতার অভাব: ভয় প্রদর্শন করার ফলে শিশুদের সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তি বাধাগ্রস্ত হয়। তারা নতুন কিছু চেষ্টা করতে ভয় পায় এবং সৃজনশীল কাজে মনোনিবেশ করতে সাহস পায় না।
শিশুদের সঠিক বিকাশের জন্য আমাদের উচিৎ তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করা। তাদের নিরাপত্তা ও ভালবাসার মাধ্যমে শেখানো উচিৎ, যা তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং তাদের মানসিক ও আবেগিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। ভয় দেখানো নয়, বরং ভালবাসা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে শিশুর মন গড়ে তুলতে হবে।